ছবি: সংগৃহীত
আল্লাহ তাআলা পুরুষকে দাড়ি দিয়ে নারী জাতি থেকে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করেছেন। দাড়ি রাখা সকল নবীর সুন্নত। ‘রাসুলুল্লাহ (স.) গোঁফ খাটো এবং দাড়ি লম্বা করার নির্দেশ দিতেন। ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘মোচ উত্তমরূপে কাটো এবং দাড়ি লম্বা করো।’ (বুখারি: ২/৮৭৫)
কোনো বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (স.)-এর নির্দেশ সেই বিধান ওয়াজিব হওয়ার দলিল। এ ব্যাপারে হানাফি, শাফেয়ি, মালেকি ও হাম্বলি মাজহাবের সকল ইমামের ঐকমত্য রয়েছে যে, দাড়ি রাখা ওয়াজিব এবং দাড়ি মুণ্ডন করা বা শেভ করা হারাম। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘গোঁফ কাটো এবং দাড়ি ঝুলিয়ে দাও, অগ্নি পূজারীদের বিরোধিতা করো।’ (মুসলিম: ১/১২৯)
দাড়ি যথাযথভাবে রেখে এবং তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করায় রয়েছে আল্লাহর নৈকট্য লাভের সুযোগ। কেননা এটি ইসলামেরই মহান নিদর্শন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর আদেশ সমূহকে সম্মান করে, নিশ্চয়ই সেটি হৃদয় নিঃসৃত আল্লাহভীতির প্রকাশ।’(সুরা হজ: ৩২)
তাই দাড়ি এমন কোনো সুন্নত নয়, যা না রাখার স্বাধীনতা রয়েছে। বরং এটি ‘সুন্নতে ওয়াজিবা’ তথা সুন্নতে মুয়াক্কাদা থেকেও গুরুত্ব বেশি।
স্ত্রীকে খুশি করতে কিংবা সমাজের বাঁকা দৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য দাড়ি কাটা, ছাটা বা মুণ্ডণ করা নাজায়েজ। কোরআন হাদিস কিংবা ফিকহের কিতাবে কোথাও এধরণের অনুমোদন পাওয়া যায়নি। বরং দাড়ি রাখাই হচ্ছে ঈমানের দাবি ও আবশ্যকতা। আলেমদের নাসিহা হচ্ছে, দাঁড়ি রাখতে হবে এবং বর্তমান সমাজে দ্বীন নিয়ে বেঁচে থাকতে হলে সকল ভ্রু-কুটি ও ঝড়-ঝঞ্ঝা উপেক্ষা করে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে।
এই নির্দেশনা অমান্য করা মুসলমানদের জন্য নাজায়েজ। আর আল্লাহ তাআলা তাঁর রাসুলের আদেশ অমান্যকারীর শাস্তির ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘অতএব যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা এ বিষয়ে সাবধান হোক যে, ফেতনা তাদেরকে গ্রাস করবে অথবা মর্মন্তুদ শাস্তি তাদের উপর আপতিত হবে।’ (সুরা নূর: ৬৩)
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর রাসুল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ করো এবং যা নিষেধ করেন, তা হতে বিরত থাকো। আর আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠিন শাস্তিদাতা।’ (সুরা হাশর: ৭)
উল্লেখ্য, দুই চোয়ালের দাঁতবিশিষ্ট হাড়ের ওপর গজানো পশম এবং কান ও চোখের মধ্যবর্তী স্থানে গজানো সারিবদ্ধ পশমই হলো দাড়ি। কোনো কোনো ইসলামি আইনবিদের মতে, ঠোঁটের নিচের অংশে গজানো পশম ও নাকের উভয় দিক সংলগ্ন গালের ওপর গজানো ও থুতনির নিচের নরম অংশে গজানো পশমও দাড়ির অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং এসব পশম কাটা বা উপড়ানো অনুচিত। (রদ্দুল মুহতার: ১/১০০, ৫/৩৭৩; ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/৩৫৮)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নবী-রাসুল ও সাহাবিদের সুন্নত অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন। সমাজের বাঁকা দৃষ্টি থেকে বাঁচতে ইসলামের কোনো বিধানকে অবজ্ঞা করা থেকে হেফাজত করুন। একইসঙ্গে পারিবারিকভাবে বিশুদ্ধ ইসলাম চর্চার তাওফিক দান করুন। আমিন। সূএ: ঢাকা মেইল ডটকম